ধর্ষণকারী হিসেবে অস্ট্রেলিয়া পুলিশের নথিতে শাকিব খানের নাম

ডেস্ক:


অস্ট্রেলিয়ায় বর্বর ধর্ষণকারী হিসেবে পুলিশের নথিতে উঠে এসেছে ঢাকাই সিনেমার সমালোচিত নায়ক শাকিব খানের নাম। সে দেশের পুলিশের একটি রিপোর্টের কপি ইতোমধ্যেই হাতে এসেছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শাকিব খান ওরফে রানা। ক্যারিয়ারের প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া গিয়েই এমন ধর্ষণকান্ড ঘটিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের সেন্ট জর্জ পুলিশ স্টেশনে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী নিজেই। মামলার স্বাক্ষী হয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম ম্যাথিউ জন ক্রুকসন।

পুলিশ রিপোর্টে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে নভোটেল দ্য গ্র্যান্ড প্যারেড অ্যাপার্টমেন্ট ৭২১ ব্রাইটন লা স্যান্ডস হোটেল কক্ষে রাত ২টা থেকে ৪ পর্যন্ত ওই নারী প্রযোজককে ধর্ষণ করেন শাকিব খান।

অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করে মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের প্রতিবেদনে শাকিবকে ধর্ষক উল্লেখ করে বলে, তিনি মধ্যপ অবস্থায় সহ-প্রযোজকের ওপর নির্মমভাবে যৌনচার চালিয়েছেন।

পুলিশ অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শাকিব খান (রানা) একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা। ভুক্তভোগী তার আঙ্কেল রহমত উল্লাহর ফিল্ম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেন। ভুক্তভোগী নারী ও উল্লাহ বাংলাদেশি একটি সিনেমার কাজ শুরু করেছেন। যার শুটিং অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশে হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় শাকিব খানের সঙ্গে ভুক্তভোগীর প্রথম দেখা হয় ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট। এরপর থেকে নিয়মিত ট্রান্সপোর্ট, হোটেল, খাওয়া-দাওয়া ও যাবতীয় বিষয়াদি দেখাশোনা করেন।

এদিকে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালি প্রযোজক রহমত উল্লাহ বাংলাদেশে এসে শাকিবের নামে মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। বুধবার (১৫ মার্চ) বিকালে সশরীরে এফডিসিতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী, প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি বরাবর এমন লিখিত অভিযোগ করেন রহমত উল্লাহ নিজেই।

সেই অভিযোগে তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ায় শুটিংয়ে গিয়ে সহ-প্রযোজককে ধর্ষণ করেন শাকিব খান। শুধু তাই নয়, এ অভিযোগে অস্ট্রেলিয়াতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন এ নায়ক। এ সংবাদটি প্রথম প্রকাশ করে ঢাকা প্রকাশ। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসে স্বয়ং শাকিবসহ ঢাকাই সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগের পর বিষয়টি মীমাংসার জন্য গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় প্রযোজকের সঙ্গে বৈঠক করেন শাকিব। সে সময় উপস্থিত ছিলেন শাকিবের সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরুসহ আরও অনেকে। একঘণ্টা চলা এ বৈঠকে কোনো সমাঝোতা করতে না পেরে অবশেষে মুখ খোলেন শাকিব খান।

যেখানে শাকিব সব অভিযোগ অস্বীকার করে রহমত উল্লাহকে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক নয় বলে দাবি করেন গণমাধ্যমে। এ ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করতে যান তিনি। পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

একই অভিযোগে রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে যান শাকিব। সেখানে ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে জানা যায়।

‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রকাশিত টিজারে দেখা যায় আশিকুর রহমান পরিচালিত এ সিনেমার প্রযোজনায় আছে বাংলাদেশের ভারটেক্স প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সিনেমাটির কো-প্রডিউসার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেফেক্টস। যার কর্ণধার রহমত উল্লাহ নিজেই।

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হওয়া এ সিনেমার ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এরপর নানা জটিলতায় সিনেমাটির শুটিং আর হয়নি।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *