নিউজ ডেস্কঃ
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে পৃথকভাবে তিন বিভাগের তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার (৮ নভেম্বর) পৃথকভাবে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও উপনির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
এতে সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোটগ্রহণকারী ২৫ জনকেই তলব করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু বকর ছিদ্দিক, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রবিবার (৫ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্যপদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে একটি পৌরসভা ও ১২ ইউনিয়নের ১১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। এরমধ্যে সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আজাদ হোসেন ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মেরে জাল ভোট দেন। পরদিন সকাল থেকে ঘটনাটির ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
একইসঙ্গে ঘটনাটি পৃথকভাবে তদন্তের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা এক চিঠিতে আমাকে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন থেকে উপনির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে পৃথকভাবে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে আমাকে দেওয়া নির্দেশনাটি বাতিল করা হয়েছে।
উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, তদন্ত শুরু করেছি। দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আটটি কক্ষে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ২৫ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল।
তদন্তের স্বার্থে সবাইকে তলব করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিদেবন জমা দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত শুরু করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার বলেন, ব্যালট বইয়ে সিল মারার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসককে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যেই প্রতিদেন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হবে।