পুঠিয়ায় আ. লীগ নেতার ভয়ে টয়লেটে প্রধান শিক্ষক, উদ্ধারে ৯৯৯-এ ফোন!

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ সৈয়দ করম আলী শাহ্ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এমনকি ভুক্তভোগী ওই প্রধান শিক্ষক ‘হামলা’ থেকে বাঁচতে টয়লেটে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। 

এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুঠিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

অভিযুক্ত জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ মোল্লা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়মিত কমিটি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এমনকি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কোনো তফসিল ছাড়াই নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য কমিটি করেছেন।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক মো. কোরবান আলী বলেন, ‘করোনার সময় থেকে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে বিদ্যালয়টি চলছে। সোমবার সকালে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদসহ স্থানীয় ১০-১৫ জন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে আসেন। একটি লিখিত কাগজ সামনে দিয়ে তাতে সই করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। আমি সই দিতে না চাইলে প্রথমে আমাকে গালাগাল করতে থাকেন। আবদুস সামাদ মোল্লা আমার জামার কলার ধরে টানাটানি করে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এক পর্যায়ে আমি প্রাণ বাঁচাতে বিদ্যালয়ের টয়লেটে ঢুকে পড়ি। সেখান থেকেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করি। কিছুক্ষণ পরেই পুঠিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাকে উদ্ধার করে।’

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. মনসুর রহমান বলেন, ‘ওই আওয়ামী লীগ নেতার পছন্দমতো কমিটি দিতে হবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেছেন, নিয়ম-নীতি মেনেই কমিটি গঠন করা হবে। এতেই আব্দুস সামাদ খেপে যান। প্রধান শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এমনকি শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন।’

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবার কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *