বাগমারার অসহায় বৃদ্ধার পাশে ডিসি-ইউএনও

বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের শয্যায় নিস্তেজ থাকা অসহায় বৃদ্ধার খোঁজ খবর নিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। ফলমূল ও পুষ্টিকর খাবার নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বৃদ্ধার সেবা-যত্ন করা জন্য একজন নারীকে নিযুক্ত করেছেন প্রশাসন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ এর নির্দেশে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান এই ওই বৃদ্ধার সার্বিক দায়িত্ব গ্রহন করেছেন। এছাড়াও একজন সেনা কর্মকর্তা সহ অনেকেই ওই অহসায় নিস্তেজ বৃদ্ধাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

গত রোববার স্থানীয় গণমাধ্যমে ‘হাসপাতালের শয্যায় নিস্তেজ বৃদ্ধা, আপনজনের খোঁজ নেই’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশতি হয়।
সংবাদটি রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদের নজরে আসে। তিনি বৃদ্ধার খোঁজ খবর ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশের পর বাগমারার ইউএনও রোববার বিকেলে হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি হাসপাতালে গিয়ে নিস্তেজ থাকা বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা করে চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। তিনি বৃদ্ধার সাথে কথা বলার চেষ্টার করেন। চিকিৎসকদের চিকিৎসা দেয়া ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। ওইদিনই বৃদ্ধাকে দেখভাল করার জন্য একজন নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও আজ সোমবার দুপুরে ইউএনও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, পুষ্টিকর খাবারসহ সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে যান। এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়াও চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও এ,এফ, এম আবু সুফিয়ান জানান, সংবাদটি জেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। সেখানে থেকে বৃদ্ধার খোঁজ খবর নেওয়ার নির্দেশনা এসেছে। তিনি বৃদ্ধার সেবা-যত্ন করার জন্য একজন নারীকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি অভিভাবক হিসাবে বৃদ্ধার সেবা করবেন। এছাড়াও নিয়মিত পুষ্টিকর খাবারের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বৃদ্ধাকে চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে আপাতত কিছুটা সুস্থ করার চেষ্টা চালানো হবে। এরপর উন্নত চিকিৎসাসহ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বৃদ্ধার পরিচয় উদ্ধারের জন্য গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন,অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই বৃদ্ধা শারীরিক ভাবে দুর্বল। অনাহারে থেকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইউএনও মহোদয় সেবা করার জন্য একজন লোক নিয়োগ করেছেন। সেবায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
এছাড়াও একজন সেনা কর্মকর্তা বৃদ্ধার সংবাদ দেখে বৃদ্ধার চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ বহনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি সব ধরণের সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন।

সোমবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধাকে অস্পষ্ট ভাষায় কিছু বলতে শোনা যায়। তবে আগের পোশাক শরীরে থাকলেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায় চোখে পড়ে। তাঁর পাশে প্রশাসনের লোকজন দেখে তিনি ওঠে বসার চেষ্টা করেন। তবে তিনি বসতে পারেননি।
হাসপাতালের এক সেবিকা জানান, আজ সকালে বৃদ্ধার সেবায় নিয়োজিত থাকা নারী তাঁকে গোসল করে দিয়েছেন। শরীরে সাবানও দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে আনার পর এই প্রথম তাঁকে গোসল করানো হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *