লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় সালিশ বৈঠকে ভাতিজা বউ কাজল আক্তার রিতাকে (২৪) মারধরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরল আমিনের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই গৃহবধূর বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে চারজনের নামে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নুরল আমিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক (ইউপি) চেয়ারম্যান ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরল আমিন (৫০), তার বড় ভাই সমশের উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মাদ বাবলু (৫৫), তার চাচাত ভাই চর সিন্দুর্না গ্রামের আব্দুর রউফ (৪৫) ও তার ছেলে রুবেল মিয়া (২৮)।
অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে চেয়ারম্যান নুরল আমিনের চাচাত ভাই আব্দুর রউফের ছেলে রুবেলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কাজল আক্তার রিতার। তাদের সংসারে সাত মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
কিছুদিন আগে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের সংসারে বিবাদ লাগলে মামলা হয়। যা আদালতে বিচারাধিন। সেই মামলা স্থানীয়ভাবে আপস মীমাংসার জন্য নিজ বাড়িতে সালিশ বৈঠক ডাকেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান নুরল আমিন। বৈঠকের একপর্যায়ে সংসার বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলে তার কারণ জানতে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চান গৃহবধূ কাজল। কিন্তু সে সুযোগ না দিয়ে কত টাকায় তালাক দেবেন? -প্রশ্ন করেন চেয়ারম্যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সালিশ বৈঠক থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে গৃহবধূ কাজলের সামনে তার বাবাকে মারধর শুরু করেন তার স্বামী রুবেল। বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান নুরল আমিন গৃহবধূ কাজলকে চুল ধরে টেনে মাটিতে ফেলে মারধর করেন। এতে হাত কাটা জখমসহ গুরুতর আহত হন কাজল।
পরে তাকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আহত গৃহবধূ কাজলের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে রোববার সকালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরল আমিনসহ চারজনের নামে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত সিন্দুর্না ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নূরল আমিন বলেন, আমি বিচার ডেকেছি ঠিকই। তবে কারো চাচা হয়ে নয়, একজন বিচারক হয়ে। আর তারা যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সেখানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর আমি কেনই বা তাদের মারতে যাবো?
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আল আকসা বলেন, আহত গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।