কানাডায় সড়কে ঝরল তিন বাংলাদেশির প্রাণ

সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে

কানাডার টরন্টোতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটেছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরেকজন। সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে আহত ওই তরুণ। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

কানাডার প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্ত। তবে কানাডার পুলিশ কিংবা স্থানীয় গণমাধ্যমে হতাহতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ বলছে, টরন্টোর হাইওয়ে ৪২৭-এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িটি বাড়তি গতিতে চলছিল। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। এরপর তাতে আগুন ধরে।

অন্টারিওর প্রাদেশিক পুলিশ এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, নিহত সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাঁরা সবাই কানাডায় উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে এসেছিলেন। অন্টারিওর রাজধানী টরন্টোতে তাঁরা থাকতেন।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চারজন আরোহী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের প্রাণহানি ঘটলেও একজন জীবিত আছেন।

টরন্টো ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে গাড়িতে লাগা আগুন নেভায় তারা। এরপর ভেতরে আটকে পড়াদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ও আহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।

কুমার বিশ্বজিতের ছেলে আইসিইউতে : ছেলে নিবিড় কুমারের দুর্ঘটনার খবর শুনে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত ১১টায় কানাডার উদ্দেশে রওনা হন কুমার বিশ্বজিৎ ও তাঁর স্ত্রী নাইমা সুলতানা। তাঁদের কানাডা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর ঘনিষ্ঠজন মোরশেদুল ইসলাম পাভেল।

তিনি জানান, কুমার বিশ্বজিৎ দাদা ছেলের দুর্ঘটনার খবর শুনে মঙ্গলবারই কানাডার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিবিড় আইসিইউতে রয়েছেন। বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় তাঁর মেজর অপারেশন হয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আহত হওয়ার পর থেকে টরন্টোর সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিবিড়। তাঁর শারীরিক অবস্থা জানাতে চিকিৎসকরা আরো ১৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করবেন। কুমার বিশ্বজিতের ভাই অভিজিত দে বিষয়টি জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদকে।

অভিজিত জানান, সোমবার কানাডার সময় রাত ১১টায় টরন্টোর ৪২৭ সাউথ বাউন্ড হাইওয়ে দুনদাস এক্সিটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিবিড়। গাড়িটি খুব দ্রুত গতিতে চলার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারায়। চালকের সিটে ছিলেন নিবিড়ই।

টরন্টো পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। গাড়ির চালক এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। সেখানে একটু কার্ভ ছিল। হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি তিনবার উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়।

নিবিড় কুমার গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হচ্ছে। তবে তাঁদের সঙ্গে থাকা এক তরুণী গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলেও শোনা যাচ্ছে। কুমার বিশ্বজিতের ছেলেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। এ ঘটনায় টরন্টোতে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোক বিরাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *