দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শেখা ছাড়া চলবে না উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আগামী জানুয়ারি থেকে স্কুলে কোডিং, ডিজাইন, অ্যানিমেশন শেখানো হবে। ৬ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের বয়স অনুযায়ী এ শিক্ষা দেওয়া হবে এবং শিশুরা খেলতে খেলতে শিখবে।’
রবিবার (০৪ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন উদ্বোধন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা হয়েছে।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তৈরি পোশাক শিল্প দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা পাই। আগামীতে তথ্য-প্রযুক্তিখাত থেকে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। সেই জায়গায় যেতে হলে শিশুদের এখনই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য আগামীতে শিক্ষাকে মেগা প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করবে সরকার।’
বিজ্ঞান ও গবেষণাকে বাস্তবায়ন এবং প্রয়োগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া খুব জরুরি উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘গবেষণায় একাডেমিক-ইন্ডাস্ট্রির মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। বাণিজ্যিকীকরণ জগতের সঙ্গে বিজ্ঞানীর চিন্তা জগতের সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তোমাদেরকে রাজনীতি সচেতন হতে হবে, সেইসঙ্গে সক্রিয় হতে হবে। রাজনীতি ইতিবাচক বিষয়। এর মধ্যে নেতিবাচকতা যেন না আসে। মানুষের মন জয় করে রাজনীতি করতে হবে। এজন্য ইতিবাচক রাজনীতির কোনও বিকল্প নেই।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও যবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই অঞ্চলের সেন্টার অব এক্সিলেন্স-এ পরিণত হয়েছে। এজন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় সুযোগ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণে সার্বিক সহযোগিতার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি কামনা করেন সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।
সভায় যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ, ডিনস কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সেলিনা আক্তার, কর্মকর্তাদের পক্ষে উপ-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ এমদাদুল হক, কর্মচারীদের পক্ষে ডাটা-এন্ট্রি অপারেটর সরদার ফরিদ আহমেদ, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এতে স্বাগত বক্তব্য দেন যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যবিপ্রবির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মুনিবুর রহমান ও একই বিভাগের প্রভাষক তুসমিত মেহরুবা আঁকা বক্তব্য রাখেন। সভায় শেষে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে উদ্ভাবন ও শুদ্ধাচার পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এর আগে যবিপ্রবিতে ১০ তলা বিশিষ্ট স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ‘যবিপ্রবি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন’ উদ্বোধন করেন। স্কুল প্রাঙ্গণে শিক্ষামন্ত্রী একটি কৃষ্ণচূড়ার চারাও রোপণ করেন।
এর আগে সবাইকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী যবিপ্রবির প্রধান ফটকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু করেন।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন