বাগমারার ৮১টিসহ রাজশাহী আদালতের ৬০১ মামলার নথি ‘গায়েব’!

রাজশাহী জুডিশিয়াল আদালত-৪ এর তিন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলির গাফিলতির কারণে ৬০১টি মামলার নথি ‘গায়েব’ হয়ে গেছে! এঘটনায় নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় চুরি মামলা করেছে কৌঁসুলির সহযোগী মুহুরি হোসেন আলী। এদিকে, মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি যাওয়ায় মামলা পরিচালনায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

চুরি হওয়া নথিগুলোর মধ্যে মোহনপুর থানার ৭০টি, বাঘার ৪২টি, দুর্গাপুরের ৬০টি, বাগমারার ৮১টি, পুঠিয়ার ৭২টি, তানোরের ১১২টি চারঘাটের ৮৩ টি ও গোদাগাড়ী থানার ৮১টি মামলার ডকেট ছিল। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া ১৮১টি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিও ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ২৪ মার্চ রাজশাহী জেলার ৮টি থানার মাদক, মারপিট ও চুরির ঘটনায় দায়ের করা ৬০১টি মামলার সব নথি চুরি হয়ে গেছে। এ ঘটনার দুদিন পর নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহী জুডিশিয়াল আদালত-৪ এর তিন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি জালাল উদ্দিন, বজলুর রহমান ও সোহেল আক্তার ডানার কাছে বিচার কাজ পরিচালনার জন্য মামলার সব নথিপত্র সরবরাহ করে পুলিশ। পরে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলিরা সব নথিপত্র মুহুরি হোসেন আলীর কাছে রাখতে দেন। তিনি মামলার সব গুরুত্বপূর্ণ নথি নগরীর রায়পাড়ার নিজ বাড়ির সিঁড়ি ঘরে রাখেন। এরপর সেখান থেকে ৬০১টি মামলার নথি চুরি হয়ে যায়।

এ কথা স্বীকার করে মুহুরি হোসেন আলী জানান, নথিগুলো তিনি সিঁড়ি ঘরের নিচে রেখেছিলেন। এগুলো চুরি হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় মামলাগুলো পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটছে জানিয়ে নিজের দায় স্বীকার করেছেন জুডিশিয়াল আদালত -৪ এর রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, নথি রাখার জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই। দেখা যাচ্ছে, আমরা যে রেকর্ডগুলো নিই, বিচারিক কাজে সহযোগিতার জন্যই নেওয়া হয়। এখন দুর্ভাগ্যবশত চুরি যে কোনভাবে হয়ে গেছে।

রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন, মামলা চলাকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এই নোট বই তৈরি করেন। এটি হরিয়ে গেলে অবশ্যই সমস্যা। এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি খোয়া যাওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আনিসুর রহমান জানান, চুরির ঘটনা ঘটেছে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকায়। মামলা দায়েরের পর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কাশিয়াডাঙ্গা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিভূতি ভূষণকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *