লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের ইয়ানোমামিতে পুষ্টিহীনতা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অনেক শিশু। আর এমন পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ইয়ানোমামিতে মূলত অবৈধ সোনা খনির কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দেশটির আদিবাসী স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস করেন ইয়ানোমামিতে। এটি ভেনেজুয়েলা সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া একটি অঞ্চল।
জরুরি অবস্থা জারি করে গত শুক্রবার একটি ডিক্রি জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সাবেক উগ্র-ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জিয়ার বোলসোনারোর আমলে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া ইয়ানোমামির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আবারও সচল করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা প্রশাসন।
জিয়ার বোলসোনারো প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইয়ানোমামিতে ৫৭০ জন শিশু নিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাদের মৃত্যুর মূল কারণ পুষ্টিহীনতা। এছাড়া ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া এবং সোনার খনিতে ব্যবহৃত ত্রুটিপূর্ণ পারদের প্রভাবে এসব শিশু মারা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অ্যামাজন জার্নালিজম প্লাটফর্ম সুমাউমা।
শনিবার ইয়ানোমামির রোরামিয়া রাজ্যের বোয়া ভিস্তার একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে যান প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা। বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুদের শরীরের হাড়গোড় দেখা যাচ্ছে এমন কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর সেখানে ছুটে যান তিনি।
ব্রাজিলের সরকার ঘোষণা দিয়েছে সংরক্ষিত অঞ্চল ইয়ানোমামির ২৬ হাজার মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা পাঠানো হবে।
এ সংরক্ষিত অঞ্চলটিতে অবৈধভাবে সোনা উত্তোলন করে একটি অসাধু চক্র। তবে ২০১৮ সালে জিয়ার বোলসোনারে ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ উত্তোলন কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
এছাড়া এখানে সংগঠিত অপরাধও বেড়ে যায়। সা¤প্রতিক সময়ে একটি গ্রামের বাসিন্দাদের ওপর স্পিড বোট থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ওই গ্রামের বাসিন্দারা অবৈধ খনি উত্তোলনে বাধা প্রদান করেছিলেন।
এদিকে লুলা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ অঞ্চলটি থেকে অনেক অবৈধ সোনা উত্তলনকারী পালিয়ে গেছে। তাদের ভয় তাদের ওপর ধরপাকড় চালাতে পারে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। সূত্র: রয়টার্স