নিউজ ডেস্কঃ
কেনাবেচার জন্য রাজধানীর জনপ্রিয় মার্কেট বঙ্গবাজার। ভয়াবহতার দিক থেকে সাম্প্রতিক যেকোনো অগ্নিকাণ্ডকে হার মানিয়েছে এ আগুন। স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর বঙ্গবাজারে। বঙ্গবাজার বর্তমানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই বাজারটি বাংলাদেশে পাইকারি কাপড়ের অন্যতম প্রধান একটি মার্কেট। সুলভ মূল্যে নানা ধরনের মানুষ এখান থেকে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য কিনে থাকেন। আগুন লাগার খবর শুধু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে নয়, ফলাও করে প্রচার হয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও।
আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৬টা ১২ মিনিটে। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। হতাহতের কোনো খবরও দিতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ ও বাতাসের কারণে আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়। আগুন নেভাতে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অংশ নিয়েছে।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রয়টার্স, এপি, আলজাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও সিজিটিএন, ডেকান হেরাল্ড, আল-আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমসসহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমে এসেছে। দুর্ঘটনার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনার তাৎক্ষণিক খবরও প্রচার করা হয়।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএ তাদের প্রতিবেদন করেছে ‘বাংলাদেশের রাজধানীর মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড’ শিরোনামে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ঢাকার বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক টেলিফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন। পরে অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঢাকার পোশাক কারখানায় টমি হিলফিগারের মতো পশ্চিমা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের পোশাক উৎপাদিত হয়। কিন্তু রপ্তানি মান পূরণ করতে ব্যর্থ হলে ওই পোশাকগুলো এই বঙ্গবাজারে বিক্রি হয়ে থাকে এবং এই কারণে অগ্নিকাণ্ডের শিকার মার্কেটটি সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দুর্বল পর্যবেক্ষণ এবং যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তাব্যবস্থার অভাবের কারণে বাংলাদেশের বহু বাণিজ্যিক স্থানে প্রায়ই আগুন লেগে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতের গত এক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়ন হয়েছে। যদিও বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডসহ অতীতে অনেকবারই বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশের এই শিল্প খাত।
রয়টার্স বলছে, দুর্বল নীতি ও সেগুলোর প্রয়োগ না থাকায় শিল্পসংশ্লিষ্ট নানা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে শত শত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া অনেকটা একই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান, আল-আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, বিজনেস রেকর্ডারসহ আরো অনেক গণমাধ্যম। গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে, ডেকান হেরাল্ড, হিন্দুস্তান টাইমস, ট্রিবিউন ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টিভিসহ দেশটির মূল ধারার বেশির ভাগ গণমাধ্যমই এ অগ্নিকাণ্ডের খবর প্রকাশ করেছে। বঙ্গবাজারের আগুনের খবর উঠে এসেছে ডনসহ পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যমেও।