বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে সহকারী জজ হিসেবে মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক-উজ-জামান। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও সহকারী জজ হিসেবে মনোনীত ১০৩ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আশিক-উজ-জামান বর্তমানে আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। তিনি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আহসান হাবিবের ছেলে। তার বাবা সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেন। মা মোছা. আলাতুন বেগম গৃহিণী। আশিকের বড় বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আশিকের জন্ম পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বালাভীর গ্রামে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছেন। প্রাথমিকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন তিনি। এরপর একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রতিটি বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আশিক স্নাতকে তৃতীয় হন।
প্রতিক্রিয়ায় আশিক-উজ-জামান বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা অর্জন আমার জন্য, আমার মা–বাবার জন্য। আমি আমার মা–বাবা, নিজের বিভাগ ও শিক্ষকদের গর্বিত করতে পেরেছি। তাঁদের গর্বিত করতে পেরে আমি গর্বিত। জুডিশিয়ালেই কর্মজীবন গড়তে চাই।’
আশিক আরও বলেন, ‘আমি একটা বিশাল বড় দায়িত্ব পেতে যাচ্ছি। সৃষ্টিকর্তা হয়তো মনে করেছেন, আমি জাস্টিস সার্ভ করতে পারব, এ জন্যই হয়তো এই পজিশন পেয়েছি। জজের আসনে বসলে আমি ন্যায়বিচার করব।’
ছেলের অর্জনে মা-বাবা দুজনেই খুব খুশি। বাবা আহসান হাবিব বলেন, ‘রেজাল্ট শোনার পর কান্না করা শুরু করে দিয়েছিলাম আমি। ফলাফল প্রকাশ করার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে। আমরা সবাই খুবই গর্বিত ও খুশি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘আশিক আমাদের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছে। এই পরীক্ষায় আমাদের বিভাগের আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে এখনো মোট সংখ্যা জানা যায়নি। এর আগে ত্রয়োদশ, চতুর্দশ পরীক্ষাতেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ফলাফলে দেশসেরা হয়েছে।’
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত পঞ্চদশ বিজেএস পরীক্ষার ফলাফলে ১০৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। এতে বলা হয়, নিয়োগসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে ১০০ জনের বিষয়ে বলা ছিল। তবে শেষ তিনজনের প্রাপ্ত নম্বর একই হওয়ায় ১০৩ জনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে।