রাজশাহী শহরের দেড় শতাধিক পুকুর সংরক্ষণ করতে নির্দেশ

দখল-ভরাট উঠিয়ে রাজশাহী শহরের দেড় শতাধিক পুকুরের সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে রাজশাহী শহরের প্রাচীন শুকান দিঘি অবিলম্বে আগের বৈশিষ্ট্যে ফিরিয়ে আনতে এবং দিঘিটির দখলে যাওয়া অংশ অবিলম্বে পুনরুদ্ধার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব নির্দেশনা এসেছে। গত বছর আগস্টে এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

সোমবার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এ আইনজীবী বলেন, রায়ে মোট ৪ দফা নির্দেশনা এসেছে। এক. অবিলম্বে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাজশাহী শহরের ১৬৫টি পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে। একটি পুকুরও যেন আর ভরাট না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

দুই. পুকুরগুলোর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে হবে। তিন. অবিলম্বে রাজশাহী শহরের প্রাচীন শুকান দিঘি আগের বৈশিষ্ট্যে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। দখলে যাওয়া দিঘির অংশ পুনরুদ্ধার করতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর চার নম্বর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মামলাটি চলমান থাকবে।

এর ফলে ভবিষ্যতে কেউ পুকুর ভরাট বা দখলের চেষ্টা করলে তা আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা যাবে।

২০১৪ সালে রাজশাহীর পুকুর ভরাট ও দখলের সংবাদ মাধ্যমে খবর-প্রতিবেদন হলে সেসব খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হয়। পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ -এইচআরপিবি পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী আসাদুজ্জামান সিদ্দীক ও এ কে এম শওকত উদ্দিন রেন্টু।

রিটে প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তী আদেশ দেন। রাজশাহী শহরের পুকুর দখল-ভরাট ঠেকাতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কতর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং দখল-ভরাটের কবল থেকে পুকুরগুলো রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।

আর অন্তবর্তী আদেশে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল রাজশাহী শহরের পুকুরের তালিকা দাখিলের নির্দেশনা। পরবর্তীতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসন আদালতে ৯৫২ পুকুরের তালিকা দাখিল করে। এরপর রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে গত বছর ৮ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। সে রায়টি সোমবার প্রকাশ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *