রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার মান উন্নয়নে রাকসু ও সিনেট কার্যকর করার দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বরেণ্য অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এখন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঘায়েল করে ‘প্রাইভেটাইজেশনের’ চেষ্টা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে সান্ধ্যসহ নানা প্রোগ্রাম দিয়ে বাণিজ্যিক কর্মকা- পরিচালিত করছে। সিলেবাসগুলো ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিষগুলোকে বাদ দিয়ে বাণিজ্যিক বিষয়গুলো রাখা হচ্ছে। যা সুষ্ঠু জ্ঞানচর্চার জন্য উপযোগী নয়। এমনকি দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের মানুষের পাশাপাশি তরুণদের চিন্তার ও মত প্রকাশের জগত সংকীর্ণ হয়েছে। তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
এই অধ্যাপক বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলো সর্বজনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জনগণের টাকায় চলে। সরকারের দিক নির্দেশনা অনুসরণ করে এটা চলতে পারে না। তাহলে এখানে কোন সৃজনশীলতা থাকে না৷ সৃজনশীল মানে নতুন মত, দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বাধীন চিন্তা ও বর্জনের ক্ষমতা। এখানে সেই চর্চা হওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। তাই মুক্ত চিন্তা চর্চার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তরের সভাপতিত্বে সমাবেশ বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগের অধ্যাপক আল মামুন প্রমূখ।
আলোচনাকালে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে রাকসু ও সিনেট কার্যকরের গুরুত্বের দিক তুলে ধরেন। এতে প্রতিনিধিত্বমূলক শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এসময় রাকসু ও সিনেট কার্যকরসহ ১৪-দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেখানে আবাসন সংকট নিরসনে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ, রাজনৈতিকভাবে সিট দখলদারিত্ব রোধ, আবাসিক হলে ডাইনিং ও ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সার্বক্ষণিক খোলা রাখা, গবেষণাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি, অযৌক্তিক ফি বাতিল, সান্ধ্য আইন ও সান্ধ্য কোর্স বাতিল, পোষ্য কোটা বাতিল, ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা নিরসন ও মেডিকেল সেন্টারে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।