প্রবল এক ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে নিহতের সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। ভূমিকম্পের পর থেকে দুটি দেশেই বড় ধরনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতে লোকজন যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে।
এরপর থেকে ২০টিরও বেশি পরাঘাত হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটি ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ছিল।
কিন্তু সোমবার স্থানীয় সময় ১টা ৩০ মিনিটের দিকে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়, কর্মকর্তারা এটিকে নতুন আরেকটি ভূমিকম্প বলে শনাক্ত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এটি কোনো ‘পরাঘাত ছিল না’।
দেশটির দুর্যোগ সংস্থার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পের পর শুধু তুরস্কেই নিহতের সংখ্যা ২৯০০ ছাড়িয়ে গেছে আর আহত ১৫ হাজারেরও বেশি।
প্রতিবেশী সিরিয়া জানিয়েছে, তাদের এখানে নিহতের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়েছে।
দুই দেশ মিলিয়ে কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া লোকজনের জীবন রক্ষার জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন উদ্ধারকারীরা।
৮৪ বছরের মধ্যে এটাকে তুরস্কের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান। ১৯৩৯ সালে তুরস্কের উত্তরপূর্বাঞ্চলের এরজিনকানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলোজিক্যাল সার্ভের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২১ সালের অগাস্টের পর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল এটি।
ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে তুরস্ক। এখন পর্যন্ত ৪৫টি দেশ তুরস্ককে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলোর একটিতে তুরস্কের অবস্থান। ‘পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট’ এর অবস্থান এই অঞ্চলে। তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব সীমান্তের দক্ষিণপশ্চিম থেকে উত্তরপশ্চিম বরাবর এই ফল্ট ছড়িয়ে আছে। ভূমিকম্পবিদরা তুরস্কের এই ‘পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট’কে অনেক আগেই ‘খুব বিপজ্জনক’ বলে সতর্ক করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ