শুরুর দিকে ভুটান কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ২১ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশকে গোল পেতে দেয়নি পাহাড়বেষ্টিত দেশটি। পরের মিনিট থেকে স্বাগতিকদের আর আটকে রাখা যায়নি। একের পর এক গোল হজম করতে হয়েছে। স্বাগতিকদের মুহুর্মুহু আক্রমণে উড়ে গেছে ভুটান।
অধিনায়ক শামসুন্নাহারের হ্যাট্রটিকে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে ভুটানকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল।
আগের ম্যাচে নেপাল ৩-১ গোলে ভারতকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ভুটানের কাছে হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হবে। তখন ফাইনাল খেলবে ভারত। রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ড্র কিংবা জিততে হবে, এমন সমীকরণের সামনে শামসুন্নাহার-আকলিমারা দৃঢ়সংকল্প নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। যে করেই হোন না কেন ভুটানকে হারাতেই হবে। পা হড়কালে চলবে না। তাতে সফলই হয়েছে বাংলাদেশ। বড় ব্যবধানে জিতে ফাইনালে উঠে ছিটকে দিয়েছে ভারতকেও।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেই প্রতিপক্ষকে চেপে ধরার চেষ্টা করে গোলাম রব্বানী ছোটনের দলের। তবে প্রথম গোল পেতে সময় লেগেছে তাদের।
২২ মিনিটে বাংলাদেশ প্রথম গোলের দেখা পায়। বাঁ প্রান্ত দিয়ে শামসুন্নাহারের কাটব্যাক থেকে আকলিমা খাতুন দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে গোলকিপারকে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে নেন। পরের মিনিটে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। শামসুন্নাহারকে ফেলে দেন এক ডিফেন্ডার। স্পটকিক থেকে শাহেদা আক্তার রিপা দূরের পোস্ট দিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন।
তবে ৩০ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। উন্নতি খাতুনের কর্নারে শামসুন্নাহার মাথা ছুঁইয়ে দেন। গোলের অনেক সুযোগ পেয়েও প্রথমার্ধে দুই গোল নিয়েই থাকতে হয়েছে লাল-সবুজ দলের খেলোয়াড়দের। বিরতির পর গোলের ক্ষুধা আরও বাড়ে। আক্রমণের তেজ বাড়িয়ে এই অর্ধে এসেছে আরও তিনটি গোল।
৫৩ মিনিটে খেলার স্কোরলাইন ৩-০ হয়। মধ্যমাঠ থেকে থ্রু পাস পেয়ে শামসুন্নাহার একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। বল পোস্টের নিচে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
৫৬ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে আকলিমার হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। পরের মিনিটে শামসুন্নাহার গোলকিপারকে একা পেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করলে গোল পাওয়া হয়নি।
তবে ৬০ মিনিটে ভুটানের জাল আবারও কেঁপে ওঠে। আকলিমা বক্সে ঢুকে ফাঁকায় বাঁ পায়ে নিখুঁত শটে দলকে চতুর্থ গোল উপহার দেন। গোলকিপার আগেই ডি-বক্স ছেড়ে বেরিয়ে এসে কিছুই করতে পারেননি।
পরের মিনিটে আকলিমার পাসে শামসুন্নাহার বক্সে ঢুকে বল জালে জড়িয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন।
বাকি সময়টুকু ভুটানের রক্ষণে বল নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও গোল ব্যবধান আর বাড়েনি। ফাইনালে ওঠার আনন্দ নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন স্বাগতিকরা।