নিজস্ব প্রতিবেদক:
সারা দেশে চলমান ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন স্থান থেকে তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে ঢাকার সেগুনবাগিচা, যাত্রাবাড়ী ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।
গ্রেফতার তিন প্রতারক হলেন- রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানাধীন দাসপুকুর এলাকার সামসুলের ছেলে মারুফ শাহরিয়ার (৩৬), বরিশালের মঙ্গলহাটা এলাকার শমসের আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন (৩৩) ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার চাতৈনভিটি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল আজিজ (৪২)।
এ সময় তাদের কাছে থেকে টিআরসি নিয়োগে প্রতারণার উদ্দেশে নেওয়া ৩২টি স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেক এবং প্রায় ৫৬ কোটি টাকার অঙ্ক বসানো স্বাক্ষর করা ১০টি চেক এবং ৫০টি স্বাক্ষর করা ফাঁকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, তিনটি স্মার্ট মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে ভর্তিচ্ছুদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং নিজেদের কখনও পুলিশ সদরদফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার আবার কখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছের লোক পরিচয় দিয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
তারা জেলা ভিত্তিতে কোনও জেলার জন্য ১৩ লাখ আবার কোনও জেলার জন্য ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার চুক্তি করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রতারণার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কারও কাছ থেকেই তারা নগদ অর্থ নেননি। সবাকেই বলেছেন, ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প দেওয়ার জন্য। চাকরি হওয়ার পর টাকা পরিশোধ করে স্বাক্ষর করা চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত নিতে হবে।
পুলিশ জানায়, চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই চক্রটি অন্তত ৩০ জনের কাছ থেকে তিন থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা লেনদেনের কার্যক্রম শুরু করেছিল। এই প্রতারক চক্র নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা এবং বাংলাদেশ পুলিশের স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিল। গ্রেফতার আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করার প্রক্রিয়া চলছে।