ধুনটের ফৌজিয়া বিথী পেলেন প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা পুরস্কার

সারা দেশের বাছাইকৃত প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৯ জন প্রিয় শিক্ষককে “আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা” দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার প্রিয় শিক্ষকদের সম্মাননা জানাতে ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ সম্পাননা প্রদান করা হয়।

২০২২ সালে প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা বাছাই শুরু হয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরের ৫ তারিখ। ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত অফলাইন এবং অনলাইনে মোট ১ হাজার ৭৭৯জনের মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে, প্রাথমিকে ২০১ জন এবং মাধ্যমিকে ১ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষকের নাম জমা পড়ে। জুরিবোর্ড তাদের মধ্য থেকে প্রিয় ৯ জন শিক্ষককে সম্মাননা দেয়ার জন্য বাছাই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে।

তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষকদের সম্মাননা দেয়া হয়। এসব প্রিয় শিক্ষকদের হাতে ক্রেস্ট,  সনদপত্র এবং ২ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

সংবর্ধনা প্রাপ্ত ৯ জন প্রিয় শিক্ষক এর মধ্যে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফৌজিয়া বিথীও রয়েছেন।

এ ব্যাপারে ফৌজিয়া বিথী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন,

এমন জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে IPDC finance ও প্রথম আলো আমার মতো শিক্ষকদের যে সম্মাননা দিলেন তাতে আমরা গর্বিত,উচ্ছাসিত.
এই অনুভূতি জানে আমার অন্তর আত্মা.

অনন্তের অন্তঃস্হল থেকে IPDC finance ও প্রথম আলো পরিবারের সকলের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ.
ধন্যবাদ জানাই আমার সেই প্রিয় শিক্ষার্থীদের তারা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে.
এবং জুড়ি বোর্ডের সম্মানিত সদস্যদের যারা আমাকে মনোনয়ন নির্বাচিত করেছেন.
এবং তাদের সকলের প্রতি আমার অসীম শ্রদ্ধা যারা আমার তথ্য দিয়েছেন।

 আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের আয়োজনে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘আইপিডিসি প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২২’। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সেলেব্রিটি হলে এক মনোমুগ্ধকর আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের কীর্তিমান ৯ জন শিক্ষককে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

গত ৫ অক্টোবর উদ্বোধনী ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২২-এর মনোনয়ন গ্রহণ। অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে সারাদেশ থেকে মোট ১,৭৭৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। প্রাথমিক পর্যায়ের ২০১ জন এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ১,৫৭৮ জন শিক্ষক মনোনয়ন পান, যাদের মধ্য থেকে ৯ জন শিক্ষককে জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তে ‘প্রিয় শিক্ষক’ সম্মাননা প্রদানের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এই ৯ জন শিক্ষককে বৃহস্পতিবার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। এছাড়া ঢাকার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি) গণ্যমান্য শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আইপিডিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মমিনুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সংশ্লিষ্টরা এতে অংশগ্রহণ করেন। এই যৌথ আয়োজনের অপরপক্ষ প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ প্রথম আলোর কর্মকর্তারা অনেকে অনুষ্ঠিত উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, শিক্ষকরা জাতি গঠনের মূল কারিগর। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে এবং বিশ্বমঞ্চে সম্মানজনক স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের শিক্ষা খাতকে আরও উন্নত করতে হবে, আর এই গুরুদায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদেরই। তবে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান, স্বীকৃতি ও মর্যাদা নিশ্চিতের দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের। সেই দায়িত্ব বাস্তবায়নে এমন সুন্দর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করায় আইপিডিসিকে অভিনন্দন।

অনুষ্ঠানে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের জীবন গঠনে, জাতি গঠনে, বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে সম্ভাবনাময় করে তুলতে দেশের শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই ক্ষুদ্র প্রয়াসের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রিয় শিক্ষকদের সম্মাননা জানাতে পারা আমাদের জন্য ভীষণ সম্মানের। আমাদের প্রিয় শিক্ষকমণ্ডলীর এই আত্মত্যাগ অনুসরণ করে জীবন গঠন করতে পারলে একটি মানবিক, সৃজনশীল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আমরা সফল হব।

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, একজন শিক্ষক তার শিক্ষকতার বাইরেও সমাজ, রাষ্ট্র তথা দেশ গঠনে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। এই কীর্তিমানদের সম্মাননা প্রদান করতে পেরে আমরা গর্বিত। তারা শুধু আমাদের প্রিয় শিক্ষকই নয়, তারা আমাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব, প্রিয় মানুষ। আইপিডিসিকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতেও আমরা এই উদ্যোগটি অব্যাহত রাখব এবং বাংলাদেশের কল্যাণ, সমৃদ্ধি, সফলতা ও জয় নিশ্চিতে শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে একত্রে কাজ করে যাব।

তিনি বলেন, শিক্ষকরা আমাদের জীবনে পথ চলার আদর্শ ও অনুপ্রেরণা। শৈশব কৈশোরের বেড়ে ওঠার সময়ে স্কুলজীবনে শিক্ষকদের দেওয়া সমস্ত জ্ঞান ও নীতিশিক্ষাই গড়ে তোলে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ। এর মাঝেও এমন কিছু শিক্ষক থাকেন যারা ব্যক্তিত্ব, শাসন ও স্নেহ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে আলাদা করে দাগ কাটেন। তাদের অক্লান্ত ও নিঃস্বার্থ অবদান কিছু শিক্ষার্থীর জীবন গড়ার ভিত্তি হয়ে থাকে। দেশব্যাপী এমন প্রিয় শিক্ষকদের খুঁজে বের করে সম্মানিত করতেই ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা। প্রথম তিনবারের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আইপিডিসি ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে চতুর্থবারের মতো আয়োজিত হলো ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২২’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *