বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারায় নদী পুণঃখনন কাজের উত্তোলনকৃত মাটি অন্যত্র বিক্রি করায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে ঠিকাদার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় জমি মালিকদের বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কোন সময় উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে বলে জানা গেছে। সরেজমিন মঙ্গলবার (২৮মার্চ) বিকেলে মাটি বিক্রির লোকজন এবং স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বাক-বিতন্ডা লক্ষ্য করা গেছে।
জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর সকাল ১০ টায় উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সূর্য্যপাড়ায় ফকিরনী নদীর তীরের বেইলী ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ৬৪ জেলা অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন (১ম পর্যায়) ২য় সংশোধিত শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাগমারায় ফকিরনী নদীর সাড়ে ১৬ কিলোমিটার ও বারনই নদীর ১৪ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। নদী পুনঃখননের ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজশাহী-৪ বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, ঢাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মনিটরিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত থেকে উদ্ধোধনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
ভবানীগঞ্জ থেকে বাগমারা থানার পার্শে ব্রীজ পর্যন্ত খনন কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে খননকৃত মাটি নদীর দুই ধারে স্তুপ করে রাখা হয়েছে যা বিক্রি করছে ঠিকাদারের লোকজন। নদী ধারের ওই সমস্ত মাটি সরিয়ে নিলে পরবর্তীতে কৃষকদের জমি নদী গর্ভে ভেঙ্গে পড়বে এমন আশংকা নদী পাড়ের কৃষকদের মাঝে।
ভবানীগঞ্জ পৌরসভার খাজাপাড়া মহল্লার রামকৃষ্নপুরের এনামুল হক, নুর মোহাম্মাদ, আয়নাল হোসেনসহ অনেকেরে জমি নদীর খননকাজে কমে গেছে। অবশিষ্ট জমি স্তুপিকৃত মাটির পাশে রয়েছে। কিন্ত ওই মাটি বিক্রির জন্য সরিয়ে নিলে ভবিষ্যতে ওই জমিও ভাঙ্গনের কবলে হারিয়ে যাবে।
কৃষক এনামুল হক জানান, আমার দশ শতকের বেশীর ভাগই নদীর ভেতর ঢুকে গেছে। আরো যেটুকু জমি রয়েছে তার পার্শেই মাটি তুলে রাখা হয়েছে। ওই মাটি সরিয়ে নিলে আমার জমিও পরে ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।
স্থানীয় আরেক জমি মালিক কামাল হোসেন জানান, নদী খনন কাজের দরপত্রে মাটি বিক্রির কোন উল্ল্যেখ আছে বলে আমরা জানতে পারিনি। পুকুর খনন করে মাটি বহনের সময় রাস্তা নষ্ট হলে প্রশাসন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করলেও এ ব্যাপারে কোন ভূমিকা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। নদীর মাটি বিক্রি করায় তা বহনে পাকা রাস্তা ও ব্রীজ এবং একটি বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।
নদী পুনঃখনন কাজের ঠিকাদারের প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান ও নাজমুল হোসেন জানান, আমাদের ঠিকাদার ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব রয়েছেন। জেলা প্রশাসন থেকে মাটি বিক্রির কাজ ওয়াকসনে নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।
এসব ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নদী খননকৃত ওই মাটি নিলামের মাধ্যমে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে।