নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সঙ্গে সভা করার পর দলের ৯টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। রবিবার বিকালে জেলার পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর এলাকার ১ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়।
কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামা ও সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পৌর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত সকল ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে রবিবার (১৪ মে) থেকেই কমিটিগুলো বিলুপ্ত বা বাতিল করা হলো। দ্রুতই সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে। তিন বছরের জন্য করা এই কমিটিগুলোর মেয়াদ এক বছর আগে উত্তীর্ণ হয়েছিল।
কমিটিগুলো বাতিলের আগে গত ৬ মে সিটি নির্বাচন নিয়ে কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের সঙ্গে সভা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সভা শেষে আসাদের নেতৃত্বে ওয়ার্ড কমিটির নেতারা কাটাখালী বাজারে জনসংযোগ করেন।
তবে পদ হারানো নেতারা বলছেন, আসাদের সঙ্গে সভা করার বিষয়টি পছন্দ হয়নি পৌর আওয়ামী লীগের নেতাদের। এ কারণে তারা ওয়ার্ড কমিটিগুলো বাতিল করিয়েছেন।
কাটাখালী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত করে দেওয়া কমিটির সভাপতি ছিলেন মো. মানিক। তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচন নিয়ে আমাদের সাথে চা-চক্র করতে এসেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এখানে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডেরই নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এর মধ্যে অন্তত ১২ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আসাদ ভাইয়ের সাথে বসার কারণেই আমাদের কমিটি বাতিল করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পাশের এলাকাটাই কাটাখালী। পৌরসভার পাশে শহরের ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডগুলো জামায়াত অধ্যুষিত। এই এলাকায় যেন কাটাখালীর আওয়ামী লীগ নেতারা নৌকার জন্য কাজ করেন, সে উদ্দেশ্যেই তাদের সাথে মিটিং করি। এরপর শুনছি সব ওয়ার্ড কমিটি বাতিল করা হয়েছে।’
আসাদ বলেন, ‘কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণকে বাতিলের কারণ দেখানো হয়েছে। কিন্তু এর চেয়েও বেশি দিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিও আছে পবায়। সেগুলো বাতিল করা হয়নি। যারা পদ হারিয়েছেন, তারা বলছেন যে আমার সাথে সভা করার কারণেই কমিটি বাতিল করা হয়েছে। তবে আমি এটা বিশ্বাস করতে চাই না। মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে আবারও নির্বাচিত করার জন্য সভা করে আমি যদি অপরাধ করে থাকি তাহলে ঠিক আছে।’
কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন স্বীকার করেছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়াটাই কমিটি বাতিলের একমাত্র কারণ নয়। তবে আসাদের কারণে কমিটি বাতিল নয় বলে তিনি দাবি করেন।
জহুরুল আলম বলেন, ‘এই কমিটিগুলো নিজের মতো করে দিয়েছিলেন কাটাখালী পৌরসভার বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলী। তিনি তখন পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। এখন আমরা নতুন কমিটি ডাকলে ওয়ার্ড কমিটির বেশির ভাগ নেতা আসেন না। তারা দল থেকে বহিষ্কার হওয়া আব্বাসের পেছনেই ঘুরে বেড়ান। বহিষ্কৃত নেতার সঙ্গে দলের লোকদের সম্পর্ক তো মানা যায় না।’
জহুরুল বলেন, ‘আসাদুজ্জামান আসাদ বহিষ্কৃত না। জেলার নেতা হিসেবে তিনি পৌরসভার ওয়ার্ডের নেতাদের সাথে যেকোনো বিষয়ে বসতেই পারেন।’