কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: এমবিবিএস কাউন্সিল
নিউজ ডেস্কঃ
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে বাড়ছে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা। শুধু বাংলাদেশি নয়, আইসল্যান্ড, কাজাখস্তান, জিব্রাল্টারের মতো দেশ থেকে রোগীরা কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসছেন। এমন তথ্য জানা গেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের সূত্রে। এবার বিদেশ থেকে আসা রোগীদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার নীতিমালা ঠিক করতে পাঁচ সদস্যর একটি কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতি বছর কত জন বিদেশিকে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়, তা নিয়ে সম্প্রতি অডিটে প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই ২০১৮ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই সংক্রান্ত পরিসংখ্যান চাওয়া হয়। এতে জানা গেছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা করিয়েছেন ৩১২ জন বাংলাদেশি।
মূলত কার্ডিওলজি, কার্ডিওথোরাসিক, অঙ্কো-মেডিসিন, হেমাটোলজি বিভাগে ওই রোগীরা চিকিৎসা করিয়েছেন। কারও কারও অস্ত্রোপচারও হয়েছে। আবার ন্যাশনাল মেডিক্যালে গত দু’বছরে ৪০ জন বাংলাদেশি চিকিৎসা করিয়েছেন। এসএসকেএমে বাংলাদেশি ছাড়াও গত পাঁচ বছরে ১১ জন আইসল্যান্ডের রোগী চিকিৎসা করিয়েছেন। কাজাখস্তানের রোগী রয়েছেন দু’জন, এক জন জিব্রাল্টারের বাসিন্দা। এভাবেই বছরে ৩০-৪০ জন করে বাংলাদেশি শহরের অন্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করান।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শেষ কয়েক বছরে বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। সঙ্গে নেপালের বাসিন্দাও রয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে সব চিকিৎসা পরিষেবা বিনামূল্যে পান রোগীরা। সেখানে ভারতের অন্য রাজ্যের, এমনকি বিদেশি রোগীদের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা নীতি নেই। অথচ, সেই পরিষেবা দিতে বছরে কয়েক লাখ রুপি খরচ হচ্ছে।’
ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যের চিকিৎসা পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হচ্ছে দালাল-চক্র। বিশেষত, বাংলাদেশি রোগীকে কম খরচে অস্ত্রোপচার বা অন্য পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার নামে এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এসে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালালেরা।’
তাই এবার সরকারি হাসপাতালে বিদেশি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নিতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তারাই স্থির করবেন, আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার নীতিমালা কী হবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘এখন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা পেতে গেলে আধার কার্ড বা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নম্বর নথিভুক্ত করতে হচ্ছে। কিন্তু বিদেশিদের ক্ষেত্রে কী হবে, বা তাদের চিকিৎসা পরিষেবা কীভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন