বাগমারায় বিক্ষোভের মুখে বঞ্চিত পরিবার কল্যাণ সহকারীদের টাকা দিলেন কর্মকর্তা, লাঞ্চিত করার অভিযোগ

বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমপ্লেক্সের পরিবার কল্যাণ সহকারীদের তোপের মুখে অবশেষে সম্মানির টাকা দিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর গতকাল (২জুলাই) রোববার ৫৩জনকে সম্মানির টাকা দেওয়া হয়। এসময় প্রতিবাদ করা কয়েকজন কর্মী শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দাবী তাঁরা ভুল বুঝে চড়াও হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তাঁরা ঝুকি নিয়ে এই দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য তাঁদের সম্মানি দেওয়ার কথা থাকলেও এতদিন দেওয়া হয়নি। ঈদের আগে গোপনীয়তা রক্ষা করে ১২জন স্বাস্থ্য সহকারীকে ১০ হাজার টাকা করে সম্মানি দেওয়া হয়। তবে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্ব পালন করা ৫৩জন পরিবার কল্যাণ সহকারীদের ডাকা হয়নি। এরমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানীর অন্যত্র বদলি হয়। তবে এখনো অবমুক্ত হননি।
বিষয়টি জানার পর গতকাল রোববার সকালে বঞ্চিত ৫৩জন পরিবার কল্যাণ সহকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জড়ো হন। তাঁরা সম্মানির দাবি করলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁদের প্রতি চড়াও হন। এসময় কয়েকজনকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করা হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠলে খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এসময় বঞ্চিতরা সম্মানি প্রদানের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাদের পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে ডেকে নেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ৫৩ জন পরিবার কল্যাণ সহকারীকে ১৩দিনের সম্মানি হিসাবে নগদ পাঁচ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়। পরিবার কল্যাণ সহকারী হোসনে আরা, আঞ্জুয়ারা খাতুন, রাবেয়া খাতুন, নাইস, বিউটি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা কোনো সম্মানি পাবেন না বলে জানানো হয়েছিল। তাদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্নসাতের চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতিবাদের পর তাদের মাত্র ১৩ দিনের সম্মানি দেওয়া হয়েছে। তবে তারা আরও বেশি টাকা পাবেন বলে জানিয়েছেন।
মাহমুদা খাতুন নামের আরেক পরিবার পরিকল্পনা সহকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি হয়েছেন। তিনি সম্মানি না দিয়েই চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এর আগেও বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করেছেন বলে বিক্ষোভকারী পরিবার কল্যাণ সহকারীরা দাবী করেন।
বুলবুল আহম্মেদ নামের এক প্রতিবাদকারী জানান, তিনি সম্মানির টাকা চাওয়াতে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে আটকে রেখে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। অন্য সহকর্মীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনি তাদের সম্মানির টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা ভুল বুঝে চড়াও হয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারীদের সম্মানি দিলেও এদের কেন জানাননি এমন প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দেননি।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, তিনি অনেক আগেই চেকের মাধ্যমে টাকা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এতদিন তিনি কেন টাকা দেননি তা এখনি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *