বান্দরবনে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত বাগমারার সৈনিক তৌহিদের জানাযা সম্পন্ন, পরিবারে শোকের ছায়া

জানাযা অনুষ্ঠিত হচ্ছে

বাগমারা প্রতিনিধি
বান্দরবনের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের বোমা (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস-আইইডি) বিস্ফোরন ও অতর্কিত গুলিতে বুধবার (১৭মে) দুপুরে নিহত হয়েছেন সেনা সদস্য তৌহিদুল ইসলাম। নিহত তৌহিদুল ইসলাম বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের নরদাশ গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থোনে তাকে দাফন করা হয়। এসময় মরহুমের কফিন সামনে রেখে সেনাবাহিনীর একটি দল তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শন করেন।
জানা যায়, নরদাশ ইউনিয়নের নরদাশ গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম প্রায় দুই বছর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বান্দরবানের রুমা উপজেলার জারুলছড়িপাড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্যের পর সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ওই স্থানে যাচ্ছিল। টহল দলটি জারুলছড়িপাড়ার ছড়ার কাছে পৌছালে বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের দিকেসন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএ সদস্যরা বোমা (আইইডি) বিস্ফোরন ও অতর্কিত গুলি ছুড়ে। এতে দুইজন কর্মকর্তা ও দুইজন সৈনিক আহত হন। তাদের কে দ্রুত হেলিকপ্টারে চট্রগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএসএইচ) নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই সৈনিক মৃত্যু বরন করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে নিহত তৌহিদুল এর মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি নরদাশে আনা হয়। এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। ছেলের মরদেহ দেখে পিতা মহসিন ও মা নাছিমা বেগম বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তির মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। তাকে এক নজর দেখার জন্য হাজারো মানুষের ঢল নামে।
বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির পার্শ্বে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান, মেজর হাসান, নরদাশ ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার আবুলসহ বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেনী ও পেশার মানুষ জানাযায় অংশ গ্রহন করেন।
নরদাশ ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার আবুল বলেন, নিহত তৌহিদুল অত্যান্ত ভদ্র ও বিনয়ী ছিল। সে আমার ছাত্র ছিল। তাকে হারিয়ে তার পরিবার ভেঙ্গে পড়েছে। ওই পরিবারের প্রতি আমরা রয়েছি।
মেজর হাসান বলেন, নিহত তৌহিদুল খুবই ভাল ছিল। নানা কর্মকান্ডে তার সুনাম রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তার পরিবার সরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান বলেন, নিহতের পরিবারের পাশে সর্বদা আমরা রয়েছি। সরকারি ভাবে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *