ভবানীগঞ্জ সরকারি কলেজে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বক্তব্য দিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ
বাগমারা প্রতিনিধি
১৯৭১ সালের কালো রাতে কী ঘটেছিল, নৃশংসতা কেমন ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গল্প শুনিয়ে ১৯৭১ সালে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়।

শনিবার সকালে কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আলোচক ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ। তিনি আলোচনা করেন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত সর্ম্পকে। কেন কালো রাত হলো এবং কী হয়েছিল ওই রাতে সে বিষয়ে ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি। পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর নৃশংসতা ও বরর্বোচিত হামলার কিছু কাহিনী তুলে ধরেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে। আবদুস সামাদ পরবর্তীতে নয় মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে কীভাবে দেশ স্বাধীন হয়েছে সে বিষয়েও গল্প করেন। কীভাবে তাঁরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন সে বিষয়ে গল্প শোনান। তাঁরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে নির্দেশে যেভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং কয়েকটি যুদ্ধের ঘটনা তুলে ধরেন গল্পে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতার গল্প শোনান এই প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা। আলোচক জানান, তিনি ওই সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২৫ মার্চ বিকেল থেকে পাকিস্তানের হেলিকপ্টার রাজশাহীর আকাশেও ওড়েছে। তাঁরা টের পেয়েছিলেন রাতে কোনো কিছু ঘটবে। রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের পালানোর খবর কীভাবে পেয়েছিলেন সে বিষয়েও তুলে ধরেন স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে। দিবসটি তাৎপর্য ও স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ এবং অবদানের কথা তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের অধ্যক্ষ হাতেম আলী।

তাঁর গল্প শুনে উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। প্রতিক্রিয়ায় বক্তব্যে তাঁরা বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি, তবে আজকের গল্পের মাধ্যমে তাঁরা যেন ১৯৭১ সালে ফিরে গেলেন। কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক আবুল কালামের সঞ্চালনায় ও অধ্যক্ষ হাতেম আলীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন শিক্ষক মামুনুর রশিদ, শহিদুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, রমজান আলী, আবু হেনা, একরামুল হক প্রমুখ। শেষে ১৯৭১ সালের কালো রাতে শহীদের বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *