রাত পোহালেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোট। এখনো খোঁজ মেলেনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের।
তাঁর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী মেহেরুন নিছা মেহেরীন কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করে চলছেন।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে মেহেরীন জানান, স্বামীর সন্ধান পেতে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশুগঞ্জ থানার ওসি ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে এ দরখাস্তের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ই-মেইলে এ দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম দরখাস্ত প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।
দরখাস্তে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরীন বলেন, প্রচারণার ক্ষেত্রেও আমরা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাইনি। ভোট কেন্দ্রে যাদের এজেন্ট দেব তাদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একজন প্রার্থীকে যেভাবেই হোক জিতিয়ে নেওয়া হবে বলে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না। আমরা বিশ্বাস করি এতকিছুর পরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমার স্বামী আবু আসিফ আহমেদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। এমতাবস্থায় ভয়ে আমরা এ পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করতে পারিনি। কিছু সংখ্যক সংবাদকর্মী স্বপ্রণোদিত হয়ে আমার বাসায় এলে আমি তাদের বিষয়টি জানাই। এরপর এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে নির্বাচন কমিশন থেকে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করাসহ তদন্তের নির্দেশ এসেছে বলে আমরা জানতে পারি।
তিনি জানান, এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে ভোটাররা ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার পর বিশেষ প্রার্থীকে জেতানোর জন্য অন্যরা প্রতীকের বাটনে চাপ দিয়ে দেবে। এছাড়া তিনি দরখাস্তে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া পূর্ব, কুট্টাপাড়া পশ্চিম, সৈয়দটুলা গরের পাড়, হাবিসটুলা, সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও উচালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে গত বুধবার থেকে নিখোঁজ থাকা নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান সমন্বয়ক আবু আসিফের শ্যালক শাফায়াত সুমন সোমবার রাতে বাসায় ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপ নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও পাঁচবারের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি।
গত ২৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে তিনি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি।